নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে

নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে বা ফোঁড়ানোর পর করণীয় তা কি আপনি জানেন? নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে ও নাক ফোঁড়ানোর পর ইনফেকশন হলে করণীয় জানতে এই পোস্টটি বিস্তারিত পড়ুন। নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে ও নাকের গেজ দূর করার উপায় সম্পর্কে সকল তথ্য আলোচনা করবো।

কিছু ক্ষেত্রে এটি সৌন্দর্যের একটি চিহ্ন হিসাবে নাক ফোঁড়ানো হয়, কারো কারো ক্ষেত্রে এটির ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক তাৎপর্য রয়েছে। যাইহোক নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে তা নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে অনেক বিতর্ক রয়েছে। কেউ কেউ এটি হালাল বলে, আবার কেউ কেউ হারাম বা হারাম বলে দাবি করেন। তবে এটা বলতে পারি ছেলেদের কান ফোঁড়ানো কি জায়েজ উত্তর হল না। চলুন জেনে নেওয়া যাক নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে এবং বিউটি পার্লারে নাক ফোঁড়ানো ঠিক কিনা।

সূচিপত্রঃ নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে

নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে হালাল না হারাম?

নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে জানেন মেয়েদের জন্য ইসলামে নাক ফোঁড়ানো হারাম নয়। কোরআন বা হাদিসে এমন কোন স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা নেই যা মেয়েদের নাক ফোঁড়ানো যাবে না। তাই এটি জায়েজ। ছেলেদের কান ফোঁড়ানো কি জায়েজ এটার কোরআন বা হাদিসে কোন সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই তবে ইসলামিক আলেমরা সাধারণত পুরুষদের জন্য নাক ফোড়াতে নিষেধ করেছেন কারণ এটিকে খারাপ ভাবে দেখা হয়। 

ইসলাম পুরুষদের নারীর মত সাঁজার অনুমতি দেয় না। এ কারণে পুরুষদের জন্য নাক ফোঁড়ানো ইসলামে জায়েজ নয়। ইসলামে শুধুমাত্র মেয়েদের তাদের নাক ফোঁড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয় কারণ এটি সৌন্দর্য এর একটি কাজ হিসাবে দেখা হয়। মা আয়েশা আঃ সৌন্দর্য এর জন্য নাক কান ফুঁটা করেছিলেন। তাই কোনো কথা ছাড়াই মেয়েরা নাক কান ফোঁড়াতে পারবে।

আরো পড়ুনঃ ঘরে পুতুল রাখা জায়েজ কি না বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন

এর জন্য ইসলামে কোনো নিষেধ নাই সেটা শুধু মেয়েদের জন্য কিন্তু ছেলেদের জন্য মেয়েদের কোনো সাজই জায়েজ নয়। তাই ছেলেরা মেয়েদের মত সাঁজতে পারবে না। তাহলে এখান থেকে জানা যায় নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে এবং ছেলেদের কান ফোঁড়ানো কি জায়েজ কিনা।

নাক কোনদিকে ডান বা বাম দিকে ফোঁড়ানো উচিত?

মেয়েদের নাকের কোন দিকে ছিদ্র করা উচিত তার ইসলামে কোনো বিধানই নাই। তাই আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী এবং ইচ্ছামত বাম বা ডান দিকে ফোঁড়াতে পারেন। আপনাদের ইচ্ছামত আপনি নাকের ডান দিকে বা নাকের বাম দিকে অথবা নাকের ভিতরে মাঝখানেও ফোঁড়াতে পারেন।

নাক ফোঁড়ানোর পর ইনফেকশন হলে করণীয় বা নাকের গেজ দূর করার উপায়

নাক ফুটা করার পর সেই স্থানে গেজ বা ব্যথা হতে পারে। নাক ফোঁড়ানোর পর ইনফেকশন হলে করণীয় বা নাকের গেজ দূর করার উপায় আপনি নিজেই এর চিকিৎসা করতে পারেন।

  • নাকের ছিদ্রে হাত দেওয়ার সময় হাত সবসময় পরিষ্কার করে নিন
  • প্রতিদিন লবন দিয়ে হালকা গরম পানি দিয়ে নাকের চারপাশে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন
  • জীবানুমুক্ত স্যালাইন ব্যবহার করতে পারেন
  • অ্যালকোহল, হাইড্রোজেন বা অ্যান্টিবায়োটিক মলম দিবেন না।
  • ইনফেকশন হলে নাকফুল খুলে ফেলবেন না এতে নাকের ফুটা বন্ধ হয়ে যাবে
  • প্রচুর বিশ্রাম নিন
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা
  • ব্যথানাশক ওষুধ নিতে পারেন যেমন প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন (16 বছরের কম বয়সী শিশুদের অ্যাসপিরিন দেওয়া যাবে না) এখান থেকে আপনারা নাক ফোঁড়ানোর পর করণীয় ও নাক ফোঁড়ানোর পর ইনফেকশন হলে করণীয় জানতে পারবেন।

নাক ফোঁড়ানো হালাল কেন?

নাক ফোঁড়ানো সাধারণত ইসলামে হালাল কারণ এটি কোরআন বা হাদীসে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করা হয়নি। ইসলামিক আলেমদের কাছ থেকেও কোন সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই যে এটি হারাম। এছাড়াও অনেক মুসলিম মহিলা নাক ছিদ্র করাকে সৌন্দর্য এবং আত্ম-প্রকাশের একটি কাজ হিসাবে দেখেন যা ইসলামে জায়েজ আছে যতক্ষণ না এটি অত্যন্ত ব্যথাজনক না হয়।

আরো পড়ুনঃ রোজা থাকা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয় কী জেনে নিন

আমাদের মুখমণ্ডল সহ শরীরের সব কিছু আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন তাই এগুলার ক্ষতি বা কষ্টের কারণ হতে পারে এমন কোনো কাজ করা উচিত নয়। অতএব নাক ফোঁড়ানো কেবল তখনই জায়েজ যদি এটি করলে কোনো ক্ষতি না হয় বা কষ্ট না হয়। কিছু মানুষ মনে করে বিবাহিত মেয়েদের নাক ফোঁড়ানো এবং নাকে নাকফুল পরা ফরজ কাজ। 

মেয়েরা নাক ফুল কেন পরে এর জন্য একটা কুসংস্কার আছে। এটা হল যে বিবাহিত মহিলারা যদি নাকফুল না পরে তাহলে তার স্বামীর হায়াত কমে যায়। ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই। যার ভালো লাগবে সে নাক ফোঁড়াতে পারে আবার নাও ফোঁড়াতে পারে। মেয়েরা নাক ফুল কেন পরে তার আসল কারণ হল নিজেকে সুন্দর দেখাতে।

নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে তা সম্পর্কে প্রশ্ন/উত্তর

ইসলামে নাক ফোঁড়ানো কি হারাম?

নারীদের জন্য ইসলামে নাক ফোঁড়ানো হারাম নয়। কিন্তু পুরুষদের জন্য নাক ছিদ্র করাকে সাধারণত ইসলামিক আলেমরা নিষেধ করেছেন। কারণ ছেলেদের মেয়েদের মত সাঁজ করা জায়েজ নয়। তাই নাক ফোঁড়ানো ছেলেদের জন্য হারাম।

আরো পড়ুনঃ রবিউল আউয়াল মাসে বিয়ে করার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত

রমজান মাসে নাক ফোঁড়ানো কি হারাম?

রমজান মাসে নাক ফোড়ানোর সুস্পষ্ট কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। যাইহোক অনেক মুসলমান বিশ্বাস করেন যে এই পবিত্র রমজান মাসে এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকা ভাল যা নিজের জন্য ব্যথাকর হতে পারে।

নাক ফোড়ানোর খারাপ দিক কি?

আপনার নাকের ভিতরে থাকা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণ হতে পারে। এবং এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি বা সি, বা দুর্বল জীবাণুযুক্ত সরঞ্জাম থেকে টিটেনাসের মতো ভাইরাসগুলি আপনার রক্তে প্রবেশ করতে পারে। রক্তপাত হতে পারে কারণ শরীরে যে কোনো ছিদ্র করলে রক্তপাত হবে।

নাক ফোড়ানোর পিছনে কি কোন অর্থ আছে?

সাংস্কৃতিকভাবে নাক কান ফোঁড়ানো ব্যক্তির সামাজিক অবস্থান নির্দেশ করে। মহিলাদের জন্য এটি তাদের স্বামী আছে এটা বোঝানোর জন্য ব্যবহার হয়। স্বামীর জন্য এটি তার স্ত্রীর প্রতি তার মালিকানা এবং অধিকার প্রদর্শন করে। 

শরীরের কোনো জায়গা ছিদ্র করা কি ইসলামে জায়েজ?

প্রথমত এটা পরিষ্কার করা উচিত যে শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য তাদের সৌন্দর্য বাড়ার জন্য তাদের নাক ও কান ছিদ্র করা জায়েজ। এই অনুমতির প্রমাণ আছে নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদিসের উপর ভিত্তি করে যখন তিনি ঈদের দিন সালাত আদায় করেন এবং তখন তিনি মহিলাদেরকে যাকাত দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং তাদের নাক কান ফোঁড়ানোর বিষয়েও বলেন। 

নাক ফোঁড়ানো নিয়ে ইসলাম কি বলে - শেষ কথা

ইসলামে নাক ফোঁড়ানো হারাম নয় কিন্তু সেটা শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য। নাক ফোঁড়ানোর সময় একটি সুই ব্যবহার করা হয়, যার সাহায্যে আপনার নাকে একটি ফুঁটা করা হয় তারপর গয়না দেওয়া হয়। যেন মেয়েদের দেখতে আরো সুন্দর লাগে। তাই আপনি যদি একটি মেয়ে হন তাহলে কোনো চিন্তা ছাড়া নাক ফুঁটা করতে পারেন। আমি আশা করি এই নিবন্ধটি পড়ে নাক ফোঁড়ানোর পর করণীয় এবং বিউটি পার্লারে নাক ফোঁড়ানো ইসলামের দৃষ্টিতে কেমন তা জানতে পারবেন। [জব আইডি=২২৪৯৮]


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url