হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি

হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি? এই বিষয়ে অনেক নারী জানে না। যেহেতু এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তাই সকল নারীর ক্ষেত্রে হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি? এ বিষয়টি জেনে রাখা উচিত। আজকের এই আর্টিকেলে হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি? এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি?

হায়েজ কি?

হায়েজ এই নামটির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। বিশেষ করে নারীরা সাধারণত এই নামের সাথে বেশি পরিচিত। সাধারণত আমরা বাংলা ভাষাতে মেয়েদের প্রতি মাসে যে ঋতুস্রাব অর্থাৎ মাসিক হয়ে থাকে এটাকে বুঝে থাকি সাধারণত এটিকে আরবি ভাষাতে হায়েজ বলা হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ রোজা রাখা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয় কি

শরীয়তের পরিভাষায় হায়েজ বলা হয় ওই প্রাকৃতিক রক্তকে যা বাহ্যিক কোনো কার্য কারণ ব্যতীত নির্দিষ্ট সময়ে নারীর যৌনাঙ্গ দিয়ে বের হয়ে থাকে। হায়েজ সাধারণত প্রাকৃতিক রক্ত। অসুস্থতা, আঘাত পাওয়া পড়ে যাওয়া এবং প্রসবের সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই। এই রক্ত নারীর অবস্থা ও পরিবেশ পরিস্থিতি ভিন্নতার কারণে নানা রকম হয়ে থাকে।

সাধারণত নয় বছরের আগে এই রক্ত দেখা দেয় না। নয় বছরের আগে এ রক্ত দেখা দিলে তা অসুস্থতার রক্ত বলে গণ্য হবে। এরপরে সাধারণত ৫৫ বছরের পর কোন নারীর হায়েজ হয় না এটি বন্ধ হয়ে যায় প্রাকৃতিকভাবে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা হায়েজ কি এ বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। এখন হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি? এ বিষয়ে জানব।

হায়েজ এর সময়সীমা কতদিন?

নারীদের হায়েজ একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে চলতে থাকে। প্রতি মাসে সাধারণত নারীদের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি দেখা যায়। এটি একটি প্রাকৃতিক বিষয় সাধারণত তাই আল্লাহ তা'আলা হায়েজ অবস্থায় নারীদের উপর ইবাদত করা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এই সময় কোন ধরনের ইবাদত করা বৈধ এবং জায়েজ নয়। হায়েজ এর সময়সীমা কতদিন? তা জেনে নেওয়া যাক।

সাধারণত সকল নারীদের ক্ষেত্রে একই সময়ে দেখা যায় না। নারীদের ভিন্নতার ক্ষেত্রে এটির সময়সীমার ভিন্নতা রয়েছে। হায়েজ এর সময়সীমা সর্বনিম্ন ৩ দিন এবং তিন রাত এবং হায়েজ এর সর্বোচ্চ সময়সীমা হলো ১০ দিন ১০ রাত। হায়েজ এর সময় রক্ত সবসময় প্রবাহিত হয় না হয়ে কিছু সময় পর পর প্রবাহিত হলেও সাধারণত সেটিকে হায়েজ বলে গণ্য হবে।

তিন দিন অথবা দিন রাতের কম বা দশ দিন দশ রাতের বেশি রক্ত প্রবাহিত হলে সাধারণত তাকে এস্তেহাজার রক্ত বলে গণ্য করা হয়। অনেক নারীর ক্ষেত্রে সাধারণত হায়েজ অবস্থা ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণত এটি সকলের ক্ষেত্রে এক হয় না। আবার অনেকের অনিয়মিত ভাবে হায়েজ দেখা যায়।

হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি

হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি? এ সম্পর্কে জানা যাক। হায়েজ বা নিফাসগ্রস্ত নারীর জন্যে হজ্জের বই সমূহে লিখিত দোয়া গুলো পড়তে পারবে এবং সঠিক মতানুযায়ী কুরআনে কারীম পড়তেও কোন অসুবিধা নেই। কেননা হায়েয ও নিফাসগ্রস্ত নারীকে কুরআনে কারীম পড়তে বারণ করে মর্মে সহিহ ও সুস্পষ্ট কোন দলিল নেই। দলিল আছে ঘুমন্ত বা জাগ্রত অবস্থায় বীর্যপাতের কারণে যার উপর গোসল ফরয ব্যক্তির ব্যাপারে।

আরো পড়ুনঃ হায়েজ অবস্থায় কুরআন পড়া - হায়েজ অবস্থায় আমল ও নিষিদ্ধ কাজ

জুনুবী অবস্থায় কুরআন পড়া যাবে না যেহেতু এ ব্যাপারে হযরত আলী রাঃ এর হাদিস বর্ণিত হয়েছে, হায়েযগ্রস্ত ও নিফাসগ্রস্ত নারীর ব্যাপারে ইবনে উমর রাঃ এর বর্ণিত হাদিসে এসেছে যে, "হায়েযগ্রস্ত ও নিফাসগ্রস্ত নারী কুরআনের কোন কিছু পড়বে না।" কিন্তু, এই হাদিসটি দুর্বল। কেননা হাদিসটি ইসমাঈল বিন আইয়াশ কর্তৃক হিজাযীদের থেকে বর্ণিত।

হিজাযীদের থেকে তার বর্ণনা দুর্বল। কিন্তু হায়েজ বা নিফাসগ্রস্ত নারী মুখস্থ থেকে কুরআন স্পর্শ না করে কুরআন পড়তে পারবে। আর জুনুবী ব্যক্তি গোসল করার আগ পর্যন্ত কোনভাবে কুরআন পড়তে পারবে না, স্পর্শ করেও না, মুখস্থ থেকেও না। আল্লাহ তাআলা বলেন, "হে ঈমানদারগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাযের ধারেকাছেও যেও না যতক্ষণ না যা বলো তা বুঝতে পারো এবং অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ না গোসল করো।"

হায়েজ অবস্থায় নামাজ পড়ার বিধান

আমরা জানি যে নামাজ হলো সব থেকে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কারণ নামাজ আমাদের প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করতে হয়। সাধারণত নারী পুরুষ সকলকে একই সময়ে নামাজ আদায় করতে হয়। কিন্তু যেহেতু নারীরা হায়েজ অবস্থায় নাপাক থাকে সাধারণত সে ক্ষেত্রে তাদের আল্লাহ তায়ালা নামাজের আলাদা বিধান দিয়েছেন।

একজন নারীর ক্ষেত্রে হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি? তার সাথে সাথে হায়েজ অবস্থায় নামাজ পড়ার বিধান সম্পর্কে জানতে হবে। হায়েজ এর সময়গুলোতে নামাজ পড়া নিষেধ। নামাজ পুরোপুরি মাপ হয়ে যায় এবং পরে কাঁচা আদায় করতে হয় না কিন্তু রোজা সাময়িকভাবে বাদ হয় এবং পরে রোজা কাজা আদায় করে নিতে হয়।

আপনার সাথে যদি এমন হয় ওয়াক্তের নামাজ এখনো আদায় করেননি কিন্তু নামাজ পড়ার সময় এখনো আছে এই অবস্থায় হায়েজ শুরু হলে সেই রক্তের নামাজ মাফ হয়ে যাবে। নামাজের শেষে ওয়াক্তের হায়েজ হয়েছে কিন্তু এখনো যদি নামাজ না পড়ে থাকেন তাহলে সেটার কাজা পড়তে হবে না।

যদি কারো ১০ দিনের কম স্রাব হয় এবং এমন সময় এগিয়ে রক্ত বন্ধ হয় যে খুব তাড়াতাড়ি গোসল করে নেওয়ার পর আল্লাহু আকবার বলার সময় থাকে তবে সেই রক্তের নামাজ পড়তে হবে। এমন অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর রক্ত শেষ হয়ে গেলে নামাজ শেষ করতে হবে। সাধারণত এই নিয়ম অনুযায়ী হায়েজ অবস্থায় একজন নারীকে নামাজ আদায় করতে হবে।

হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কিঃ শেষ কথা

হায়েজ কি? হায়েজ এর সমাসসীমা কতদিন? হায়েজগ্রস্ত নারীদের দোয়া করার হুকুম কি? হায়েজ অবস্থায় নামাজ পড়ার বিধান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের উক্ত বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত।

আরো পড়ুনঃ নাপাক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা জেনে নিন

আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে অবশ্যই সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়। ২০৮৭৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url